সাইকোলজি

বাংলাদেশের কিশোর কিশোরীরা কেন আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে?

বাংলাদেশের কিশোর কিশোরীরা কেন আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে?

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে গেছে। তারচেয়েও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে কিশোর কিশোরীর আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। সুনির্দিষ্ট কোন বিষয়ে এই আত্মহত্যা বাড়ছে না। এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ৷ পড়াশুনায় অকৃতকার্য হওয়া, আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারা, খারাপ সময় পরিবার তথা বাবা মাকে পাশে না পাওয়াকেই অনেক বিশেষজ্ঞ কিশোর আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসেবে দেখছে।

বিশেষজ্ঞদের এমন দাবী ফেলে দেবার মতও না কারণ প্রায় প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হবার পর নিউজ পেপারে এমন খবর পাওয়া যায়। তাছাড়া অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা সেই দিকেই ইঙ্গিত দেয়। কিছু দিন আগেই বুয়েটের শর্ট লিস্টে জায়গা কর‍তে না পারার কারণে এক কিশোরী আত্মহত্যা করে। এত কম বয়সে এত সিদ্ধান্ত সে কিভাবে নিলো? কে তাকে বুঝালো যে বুয়েটে ভর্তি হতে না পারলে তার জীবন রাখার দরকার নেই? হয়তো সরাসরি এটা কেউ তাকে বলি নি, কিন্তু তার কাছে বুয়েটকে এমন করেই উপস্থাপন করা হয়েছে।

বুয়েটে চান্স না পাওয়া, ঢাবিতে ভর্তি হতে না পারা অথবা মেডিকেলে পড়াশুনার সুযোগ না পেলেই যে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হবে এটা কোথাও লেখা নেই তবে এসব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে পরিবারের কথা শুনতে হবে, পাশের বাসার আন্টির ভৎসনার শিকার হতে হবে এটা নিশ্চিত। তাই বলে এমন সিদ্ধান্ত কখনোই কাম্য নয়। পড়াশুনায় অকৃতকার্য হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার পেছনের সবটা দায় পরিবারের না হলেও এখানে পরিবারের অনেক কিছুই করার থাকে।

করোনা মহামারিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে এর পেছনে কারণ কি? বিষণ্ণতা, অভিমান, নাকি ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা?

পরিসংখ্যান কি বলছে?

বাংলাদেশে আত্মহত্যা নিয়ে পরিসংখ্যান দিচ্ছে ভয়াবহ তথ্য। ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করেছে, যাদের মধ্যে ৩৫% এর বয়স ৫ থেকে ১৯ বছর। আরেক তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৩ থেকে ৬৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে যার মধ্যে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ কিশোর আর ১১ দশমিক ৭ শতাংশ হচ্ছে কিশোরী। উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ছেলেদের আত্মহত্যার হার বেশি হলেও মধ্যম আয় আর নিম্ন আয়ের দেশে এই হার ইদানীং বাড়ছে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের এজন্য সহযোগী অধ্যাপক বলেন বাংলাদেশে যাদের বয়স ১০ থেকে ২৪ বছর তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তিনি জানান কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে তেমন একটা পার্থক্য নেই। একই সাথে তিনি কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হিসেবে, পারিবারিক পরিবেশ, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, চারপাশ পরীক্ষা পদ্ধতি রেজাল্ট এর কথা উল্লেখ করেছেন।

তাছাড়া গত এক যুগে প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় আত্মহত্যায় দেশে মৃত্যুহার লাখে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৬ জন। এবং সময়ের সাথে সাথে এটি বাড়ছে। আত্মহত্যার সঠিক বা সুনির্দিষ্ট কোন কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায় নি তবে আত্মহত্যা প্রবণতা তরুণ তরুণীদের মধ্যেই বেশি। আন্তর্জাতিক জার্নালের তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনে একজন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী মানসিক সমস্যা, বিষণ্ণতা আত্মহত্যার অন্যতম কারণ বলে পরিগণিত হলেও আমাদের দেশে তাৎক্ষণিক তীব্র তাড়না থেকেও তরুণ তরুণীরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

বাংলাদেশের কিশোর কিশোরীরা কেন আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে?

বাংলাদেশের তরুণ তরুণীদের মধ্যে কেন আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে বা কেন তারা এমন ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এর পেছনে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ এখন পর্যন্ত গবেষণা করে বের করা সম্ভব হয় নি। একজন কিশোরকে একাধিক কারণ এমন কর্মকাণ্ডে প্ররোচিত করতে পারে। সেটা হতে পারে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ইত্যাদি। আমাদের দেশের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি এবং এই ধরণের কাজে ধাবিত হওয়ার বিশেষ কিছু কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল,

বংশগত কারণ ও পারিবারিক ইতিহাস

একটু অদ্ভুত শুনালেও বিশেষজ্ঞরা বলছে আত্মহত্যার প্রবণতার জন্য ৩৮%-৫০% ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণ দায়ী। পরিবারে একাধিক আত্মহত্যার মত ঘটনা থাকলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেখানে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এক পরিবারে কয়েকটা আত্মহত্যার ঘটনা হলে সেখানে আরও আত্মহত্যার কেস পাওয়া যায়।

হঠকারী সিদ্ধান্ত

আমাদের দেশে এই কারণটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার জন্য দায়ী। আগে কোন মানসিক রোগ না থাকলেও এমন কোন তাৎক্ষণিক ঘটনা, যাতে কোন ব্যক্তি মানসিক ভাবে প্রচন্ডভাবে আঘাত পেতে পারে, অনেক ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করতে পারে।

এমন ঘটনার উদাহরণ হতে পারে, শারীরিক নির্যাতনের পর পর আত্মহত্যা, দাম্পত্য কলহের কারণে আত্মহত্যা, পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্টে আত্মহত্যা, প্রিয়জনের মৃত্যুতে আত্মহত্যা, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা ইত্যাদি। যেহেতু এই ধরণের ঘটনায় হুট করেই কোন ব্যক্তি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে সেহেতু এই ধরণের আত্মহত্যা ঠেকানো বেশ কষ্টসাধ্য তবে কড়া নজরদারি, আত্মহত্যার উপকরণ সরিয়ে রাখার মাধ্যমে এটি কমানো সম্ভব।

মানসিক রোগ

দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগ আমাদের দেশের কিশোর কিশোরীদের আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ। মানসিক রোগ আত্মহত্যার জন্য ২৭%-৯০% দায়ী। বেশ কিছু মানসিক রোগ যেমন, ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা, বাইপোলার ডিসঅর্ডার (ম্যানিক-ডিপ্রেসিভ), সিজোফ্রেনিয়া, পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার (বর্ডারলাইন, এন্টি সোশ্যাল ও হিসট্রিওনিক পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার), লাভ অবসেশন ইত্যাদি কারণে কিশোর কিশোরীরা আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।

দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন সবার মধ্যেই মোটামুটি রয়েছে কারণ কিশোর বয়সটাই দুশ্চিন্তার তবে তবে যখন এই ডিপ্রেশন ভয়াবহ আকার ধারণ করে তখনই এই ধরণের সমস্যা তৈরি হয়।

ব্যর্থতা মেনে নেয়ার অক্ষমতা

বর্তমান তরুণ সমাজের হতাশা, দুঃশ্চিন্তা, বিষণ্ণতার অন্যতম কারণ ব্যর্থতা না মেনে নেয়ার মন মানসিকতা। সবাই সফল হবে না, একবার ব্যর্থ হলে পুনরায় সেটার চেষ্টা করা উচিৎ এই মন মানসিকতা কিশোর কিশোরীদের মধ্যে দেখা যায় না। আর এজন্যই চাকরি না পাওয়া পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া, প্রেমে ব্যর্থতার মত ঘটনায় ছেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে বসে।

পারিবারিক কলহ বিবাদ

পারিবারিক কলহ শিশুদের মনে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে, এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা তাকে মানসিক ভাবে অসুস্থ করে তুলে। পরিবারে বাবা মার কলহ, চিৎকার চেঁচামেচি অনেকের মনে শিশু বয়স থেকে দাগ কেটে থাকে। কিশোর বয়সেও অনেকে এগুলা সহ্য করতে পেরে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে।

তাছাড়া বাবা মার সম্পর্ক ভাঙ্গন, ডিভোর্স, আলাদা বসবাস করার মত ঘটনা কিশোর কিশোরীর মনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের দেশে এমন ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। কিশোর কিশোরী বাদেও দাম্পত্য কলহের কারণে অনেক পুরুষ মহিলা আত্মহত্যা করে।

অর্থনৈতিক কারণ

আত্মহত্যার পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে অর্থনৈতিক কারণ। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার প্রায় ৭৫% ই ঘটে নিম্ন ও মাধ্যম আয়ের দেশ গুলোতে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা এর ফলে মানসিক চাপ এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে অনেক তরুণ আত্মহত্যা করে। ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্নতায় অনেকে আত্মহণণের পথ বেছে নেয়।

Bullying বা উৎপীড়ন

আমাদের দেশে বুলিং এর শিকার হয়ে অনেক কিশোরী আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে। বুলিং এর শিকার বেশিরভাগ কিশোরীরা, ভয় প্রদর্শন, হুমকি , বলপ্রয়োগের ফলে বাবা মাকে সমস্যা খুলে বলতে পারে না। এবং আস্তে আস্তে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অপমানিত বিব্রত বা র‍্যাগিং এর শিকার হওয়া বুলিং এর অন্তর্ভুক্ত। র‍্যাগিং এর শিকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থী, পরিবারের কাছে বা স্যারদের অভিযোগ নিয়ে যেতে পারে না বা গেলেও তেমন সাহায্য পায় না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে র‍্যাগিং এর শিকার হয়ে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।

বর্তমান সময়ে বুলিং সবচেয়ে বেশি হয় ইন্টারনেটে, অন্য যেকোনো বুলিং থেকে এটা কয়েকগুণ বেশি ভয়াবহ! ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আমাদের দেশের অনেক কিশোরীকে বুলিং এর শিকার করা হয়। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেয়ার মত ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় অনেক তরুণী। পরিবার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোথাও না যেতে পারায় সর্বশেষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী।

মাদকাসক্তি ও বিভিন্ন বদভ্যাস

আমাদের দেশের অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিশোররা মাদকাসক্তি ও বিভিন্ন বদভ্যাসের কারণে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়। কিশোর বয়সে মাদকাসক্তি বা ড্রাগের ফলে মানসিক আনস্ট্যাবল কন্ডিশনে পড়ে অনেকে আত্মহত্যা করে। কিছুদিন আগেও LSD নামক ভয়াবহ এক মাদকে একজনের আত্মহত্যার ঘটনা আমরা খবরে দেখেছি। বিভিন্ন তথ্য বলছে হিরোইন সেবীদের আত্মহত্যার হার সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রায় ১৪ গুন বেশি। তাছাড়া ইয়াবার মত মাদক দ্রবও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলে।

মাদকাসক্তি ছাড়া বেশ কিছু বদভ্যাশ দীর্ঘমেয়াদি খারাপ ফলাফল দিতে পারে যেমন রাত জাগা। মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে আত্মহত্যাকারী অধিকাংশদের ইতিহাস পড়ে জানা যায় তারা রাতে ঘুমাতে পারতো না। গবেষণা বলছে যেসব কিশোর কিশোরীরা রাতে পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুমায় তাদের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা, যারা ৮ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের তুলনায় ৭১% বেশী এবং আত্মহত্যার চিন্তা ৪৮% বেশী।

শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার

শৈশবে নিপীড়নের শিকার তরুণ তরুণীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার ১১-১৩ গুণ বেশি। শৈশবে ঘটে যাওয়া এমন দুর্ঘটনা, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ভাবে তাদের পিড়া দেয় এবং একই ঘটনায় পুনরাবৃত্তি একসময় মানসিক ভাবেও কিশোর কিশোরী বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। তথ্য মতে নিপীড়নের শিকার শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারুণ্যে পৌঁছার পর ৩২% আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকে।

আন্টিডিপ্রেশন ঔষধ

অবাক করার মত বিষয় হলেও আন্টিডিপ্রেশন ঔষধ কখনো কখনো আত্মহত্যার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। যারা বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভোগে তারা সাধারণত নিজেদের বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন কমাতে অনেক সময় ডাক্তারের পরামর্শ বিভিন্ন আন্টিডিপ্রেশন ঔষধ সেবন করে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন তথ্য বলছে ২৪ বছরের নীচের রোগীদের আন্টিডিপ্রেশন ঔষধ আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

অপ্রত্যাশিত ফলাফল মেনে না নিতে পারা ক্ষমতা

সবাই ভাল রেজাল্ট করবে না, সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবে না এই সত্য মেনে নেয়ার ক্ষমতা আমাদের অনেক কিশোর কিশোরীর মধ্যে নেই তাই তারা হঠাৎ করেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে। তাছাড়া অনেক অভিভাবক সন্তানদের উপর প্রত্যাশার চাপ বাড়িয়ে দেয়, প্রত্যাশা পূরণ না হলে তাদের উপর নেমে আসে মানসিক নির্যাতন। একে তো নিজের ব্যর্থতা তার উপরে পরিবারের সাপোর্ট না পেয়ে অনেক তরুণ তরুণী আত্মহননের পথ বেছে নেয়।

অভিভাবকদের উদাসীনতা

আমাদের দেশে এখনো বাবা মা এবং সন্তানদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক তেমন দেখা যায় না। বাবা মাকে সব কিছু শেয়ার করার মত প্র্যাকটিস এখনো আমাদের দেশে আসে নি। তবে সেটা আত্মহত্যার কারণ না হলেও আত্মহত্যার পেছনে বাবা মার উদাসীনতা অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী। সন্তান কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে ঠিক মত খোজ না রাখা অন্যতম কারণ সন্তান বিপথে যাবার।

তাছাড়া কিশোর কিশোরীরা অভিভাবকদের তাদের মনে কথা সমস্যা খুলে বলতে পারে না, বললেও অভিভাবকরা সেটার গুরুত্ব দেয় না ফলে দীর্ঘ মেয়াদি মনোমালিন্য তৈরি হয়৷ অনেক সময় কিশোর কিশোরীর সুইসাইড নোটে বাবা মাকে নিয়ে অভিযোগ করতে দেখা যায়।

আমাদের দেশে কিশোর কিশোরী আত্মহত্যার নির্দিষ্ট কোন কারণ না থাকলেও উপরে বর্ণিত বিষয় গুলো আত্মহত্যার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button