প্যারেন্টিংলাইফ স্কিলশিক্ষা

যেভাবে শিশুকে লাইফ স্কিল শেখাবেন

বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতিটি শিশুকে লাইফ স্কিল শেখানো প্রতিটা বাবা মা এর কর্তব্য। সব কাজ বাবা মা না করে দিয়ে নিজের কাজ নিজে কর‍তে শিক্ষা দেয়া উচিৎ। কিছু কিছু কাজ শিশু বয়সেই শেখানো উচিৎ কারণ বড় হয়ে গেলে তখন চেষ্টা করেও অনেক কিছু শেখানো যায় না। শিক্ষার উপযুক্ত সময়ই হচ্ছে শিশুকাল। তবে

সব কিছুরই একটা কর্মপদ্ধতি রয়েছে। কোন স্কিল কীভাবে শিশুকে শেখাবেন সেটারও রয়েছে বিভিন্ন ধাপ, তো আজকের এই আর্টিক্যালে আমরা জানব কীভাবে শিশুকে বিভিন্ন লাইফ স্কিল শেখাবেন।

কাজটি আগে করে দেখান

প্রথমত আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কি শেখাতে চাচ্ছেন। যেমন ধরুন আপনি আপনার সন্তানকে শেখাবেন কীভাবে কাপড় ভাজ করতে হয় অথবা ড্রেস পরতে হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে কাজটি করতে হবে এবং তাকে কীভাবে কর‍তে হয় দেখাবেন। শিশুদের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে দেখে দেখে শিখবে। আপনি যা করবেন এটা সে দেখবে এবং নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করবে।

শেখানো প্রথম ধাপ হবে তাকে মুখে বলে বলে দিক নির্দেশনা দেয়া। মনোযোগ ধরে রাখার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবার নির্দেশনা দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এর পর আবার বিষয়টি রিপিট করুন। এই সময় আপনার ভয়েস টোন হবে নরম। জোর গলায় কথা বলা যাবে না। আপনি যদি নির্দেশনা গুলো লিখে দিতে পারেন তাহলে আরও ভাল হয়।

এবার কাজটি আপনি তাকে করে দেখান। শুধু একবার নয় কয়েকবার করে দেখাতে পারেন।

এক সাথে কাজ করুন

এখন আপনার সন্তান জানে কাজটি কীভাবে করতে হবে। তো দ্বিতীয় ধাপে এক সাথে দুইজন মিলে কাজটি করার পালা। কখনো আপনি করবেন কখনো তাকে দিয়ে করান। কখনো আবার দুইজন এক সাথে মিলে করুন৷ এক সাথে কাজ করার সময় আপনার মনোযোগ এক দিকেই রাখার চেষ্টা করুন। রান্না বসিয়ে রেখে, অন্য কাজের ফাকে শিশুকে কোন কিছু শেখাতে বসবেন না। শিশুর লার্নিং এর ক্ষেত্রে আপনি যতটা মনোযোগ দেবেন তার কাছ থেকেও ততটা মনোযোগ আশা করতে পারবেন।

তার কাজ দেখুন এবং উৎসাহ দিন

শিশু যখন স্কিলটি শিখবে তখন তাকে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করুন। প্রতিটি ধাপে একটা কাজ সফল ভাবে করার পর তাকে উৎসাহ দিন। কাজটি ভাল হচ্ছে, তুমি পারবে, এই ধরণের কথা এই মুহূর্তে বেশ কাজে আসবে। কাজ ঠিকঠাক না পারলেও অসুবিধা নেই। রাগ করা যাবে না বা বকা দেয়া যাবে না। পুরো সময়টা শিশুর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। তৃতীয় ধাপে কাজ হল তার কাজ দেখবেন এবং তাকে উৎসাহ দেবেন। ভুল ভাবে করলে তাকে সঠিক কর্মপদ্ধতি দেখিয়ে দেবেন। পরের ধাপে শিশু কাজটি একা করবে তাই এই ধাপে তাকে সব কিছু ঠিক মত বুঝিয়ে দিন।

কাজটি একা করতে দিন

চার নাম্বার এবং ফাইনাল ধাপে আপনার পদক্ষেপ হবে তাকে কাজটি একা করতে দেয়া। এবার তাকে এতক্ষণ যা শিখেছে তা একা করতে দিন। সে কখনো পারবে কখনো পারবে না। তাকে নিজে থেকে সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধান করতে দিন। কাজটি যতবার প্রয়োজন সে করুক তখন তাকে বাধা দেবেন না। আপনার কাছে সাহায্য চাইলে আপনি সাহায্য করতে পারেন।

যেকোনো স্কিল শেখানোর ক্ষেত্রে আপনি সাধারণ ভাবে এই ধাপ গুলো ফলো করতে পারেন। তবে শেখানো একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, এক দুই দিনের শিশু পুরো কাজটি শিখে ফেলবে এমনটি আশা করা যাবে না। ধৈর্য ধরুন, ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করুন এবং শেখানো অব্যাহত রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button