![](https://lifedoze.com/wp-content/uploads/2023/10/pexels-alex-green-5692194-780x470.jpg)
বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুকে ঘরোয়া বিভিন্ন স্কিল শেখান
কিছু লাইফ স্কিল রয়েছে যা প্রতিটি শিশুর জন্য জরুরী এবং জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কাজে লাগে। আপনার শিশু বেড়ে উঠার বয়সে গৃহস্থালির বিভিন্ন স্কিল নিয়ে তাকে শিক্ষা দিন যেমন কীভাবে নিজেকে স্কুলের জন্য রেডি করবে, কীভাবে নিজের খাবার রেডি করবে এবং স্বাস্থ্য সচেতন থাকবে।
আজকের এই আর্টিকেলে এমন কয়েকটি লাইফ স্কিল দেখতে চলেছি যেগুলো প্রতিটি শিশুকেই শেখানো উচিৎ ,
স্বাস্থ্য সচেতনতা
আপনার শিশুকে ছোট বেলা থেকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলুন। কীভাবে নিজের যত্ন নিতে হয় সেটা শেখান। স্বাস্থ্য সচেতনতার শিক্ষা দিতে আপনাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না, যখন থেকে বুঝতে শিখবে তখন থেকেই বিষয় গুলো তাকে শেখান। আপনি হয়তো শিশুকে, গোসল করতে, ব্রাশ করতে এবং হাত ধুতে বলুন কিন্তু এগুলো কেন করতে হয় সেটা হয়তো বলা হয়ে উঠে না। কেন কাজ গুলো করতে হয় এবং করার ফলে কি উপকার পাওয়া যায় সেটা তাদের বুঝিয়ে বলুন। এই সময় সুস্থ থাকতে তাকে একটি হেলদি চার্ট তৈরি করে দিতে পারেন। যেমন কখন ব্রাশ করবে, কখন কখন পানি খাবে, কখন হাত ধুতে হবে ইত্যাদি।
টাইম ম্যানেজমেন্ট
প্রতিটি মা বাবাই জানেন টাইম ম্যানেজমেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং সংসারকে ট্র্যাকে রাখতে টাইম ম্যানেজমেন্ট কতটা জরুরী। আর তাই আপনার সন্তানকে টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে শিক্ষা দিন। শিশুকে শেখান কীভাবে সময়ের কাজ সময়ে করবে কীভাবে কাজের সাথে লেগে থাকতে হবে। তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন শিডিউল করে কাজ করলে সেটা কতটা কার্যকর হয়। টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আলোচনা করলেই হবে না, আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সে এটা মেইনটেইন করছে কিনা এবং আজকের কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে রাখছে কিনা। টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে বিভিন্ন মোটিভেশন ভিডিও আপনার সন্তানের আগ্রহ বাড়াতে পারে।
খাবার তৈরি
অনেক বাবা মা এটা এড়িয়ে যেতে পারেন তবে এমনটি করা একদমই উচিৎ নয়। শিশুকে শেখান কীভাবে নিজের খাবার নিজে তৈরি করতে হয়। শিশুরা যেন খাবার জন্য আপনার উপর নির্ভর করে না থাকে সেটার শিক্ষা দিন এখানে শিশুকে ছোট বেলায় রান্না শিখতে হবে এমনটি নয়। নিজের টিফিন যেন নিজে তৈরি করতে পারে, রেডি করে ব্যাগে নিয়ে স্কুলে যেতে পারে, ওভেনে কীভাবে খাবার গরম করা যায় ইত্যাদি বিষয় গুলো শেখান।
আপনি যখন রান্না করবেন তখন বিভিন্ন প্রয়োজনে শিশুকে ডাকতে পারেন তাদের সাহায্য চাইতে পারেন। যখন তারা রান্না ব্যাপারে কোন প্রশ্ন করবে এবং কিছু জানতে আগ্রহী হবে তখন সেটা তাকে শেখান।
অর্থ ব্যবস্থাপনা
শিশুকে অর্থ ব্যবস্থাপনা শেখান। বিভিন্ন হিসাব করা এবং ব্যাসিক ম্যাথ এর বাস্তবিক প্রয়োগ দেখান। বই থেকে অংক বা যোগ বিয়োগ ভাগ শেখার সময় এগুলোর বাস্তব জীবনের কীভাবে কাজে লাগে সেটা তাকে জানান। যেমন দোকান থেকে কোন কিছু কিনলে সেটা কত টাকা দিয়ে কিনেছেন দোকানদার কত টাকা ফেরত দিয়েছে সেটা তার সাথে বাসায় এসে আলোচনা করুন।
মিতব্যয়ী হবার শিক্ষা দেওয়ার সময়ও কিন্তু তখন। কীভাবে খরচ করতে হবে কতটুকু খরচ করতে ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দিন। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার শিশু যেন কখনো অপচয় না করে। অপচয়ের কুফল নিয়ে তার সাথে আলোচনা করুন।
ঘর পরিষ্কার
আমাদের দেশের মায়েরাই ঘরের সব কাজ করে। ঘর পরিষ্কার গুছানো থেকে শুরু করে সব কিছু। অনেকেই এই বিষয়টি এড়িয়ে যায় যে শিশুদেরও এসব শিক্ষা দেয়া উচিৎ। কখন কখনো মেয়েদের এই সংক্রান্ত শিক্ষা দেয়া হলেও ছেলে শিশুদের এসব কাজ শেখানো হয় না। এমনটি করা উচিৎ না, শিশুকে ছোট বেলা থেকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া উচিৎ। কীভাবে ঘর পরিষ্কার করতে হয়, ময়লা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হয় নিজের বিছানা গুছাতে হয় ইত্যাদি শেখান। খাবার পর নিজের প্লেটটা কীভাবে ধুয়ে রাখতে হয় এই বিষয় গুলো আপনি অবশ্যই শেখাবেন।
পোশাক পরা এবং নিজেকে প্রস্তুত করা
শিশুকে শেখান কীভাবে নিজের ড্রেস পরতে হয়, ব্যাগ গুছাতে হয় এবং নিজেকে স্কুলের জন্য প্রস্তুত করতে হয়। টাই বাধা, জুতার ফিতা বাধা ইত্যাদি বিষয় ছোট বেলা থেকেই শেখানো উচিৎ, না হয় পরে আর শেখানো যায় না। স্কুল থেকে এসে তার কাজ কী হবে, জুতা কোথায় রাখবে ইত্যাদি বিষয় শিক্ষা দিন।
ঘুম থেকে উঠার পর তার কাজ গুলো কী কী হবে সেটার একটা চার্ট করে দিন। যেমন ঘুম থেকে উঠে এলার্ম বন্ধ করবে, ব্রাশ করবে ইত্যাদি। প্রথমে একটা এলার্ম এর ছবি এর পর ব্রাশ এর পর পোশাকের ছবি দিয়ে একটা চার্ট বানিয়ে দেয়ালে লাগিয়ে দিন।
গৃহস্থালির এই কাজ গুলো আপনি ছোট বেলা থেকেই শিশুকে শেখানোর চেষ্টা করুন। এই স্কিল গুলো একদিকে যেমন আপনার অনেক সময় বাচাতে পারবে তেমনি আপনার সন্তানও নিজের কাজ নিজে করে অন্যের নির্ভরশীলতা কমাতে পারবে।