কিভাবে বুঝবেন আপনি Depression এ ভুগছেন ? Depression এ করনীয়
বিষণ্ণতা বা Depression এই শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। পৃথিবীতে কেউ বলতে পারবে না যে, সে কোন দিন বিষণ্ণতা অনুভব করে নি। বলা যায় এটি মানবজীবনের সহজাত একটি বৈশিষ্ট্য। কম বেশি সবাই কখনো বিষণ্ণতায় ভুগেছেন, তবে মনে রাখবেন মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেশন আপনার স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে। আপনি যদি মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেশনে ভোগে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।
মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেশন চেনার উপায়
কোন নির্দিষ্ট কারণে আপনি বিষণ্ণতা অনুভব করলে এবং কিছু সময় পর তা চলে গেলে, ভয়ের কিছু নেই এটা স্বাভাবিক। তবে আপনার মাঝে যদি নিচের লক্ষ্মণ গুলো দিনে পাঁচবারের বেশি দেখা দেয় এবং এটি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে। তাহলে ধরে নেবেন আপনি স্বাভাবিক ডিপ্রেশনে ভুগছেন না, আপনাকে এখনি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
- বিষণ্ণতা অনুভব করা এবং মেজাজ খিটখিটে থাকা
- ঘুমের সমস্যা হওয়া, হয় বেশি বেশি ঘুমানো অথবা ঘুম না আসা এবং দিনে অধিক সময় ঘুমানো।
- আগ্রহ পরিবর্তন, যে বিষয় গুলো আগে ভাল লাগতো এখন সে গুলোতে আগ্রহ কমে যাওয়া।
- নিজেকে দোষী ভাবা
- নিজের প্রতি উদাসীনতা, ঠিক মত খাওয়া দাওয়া না করা শরীরের যত্ন না নেয়া।
- যেকোনো কাজে মনোযোগ হারিয়ে ফেলা, ফলাফল সরূপ পারফরম্যান্স কমে যাওয়া
- ক্ষুধার পরিবর্তন, আগের চেয়ে বেশি ক্ষুধার্ত অনুভব করা অথবা ক্ষুধা একেবারে না লাগা
- সব সময় আতংক গ্রস্ত বা ভয়ে থাকা
- নিজের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ করা
তবে মনে রাখবেন আত্মহত্যা চেষ্টা করা সব সময় ডিপ্রেশনের লক্ষ্মণ নয়, কেউ কেউ ডিপ্রেশনে থেকে নিজেকে বাঁচাতেও চায় বা কারও আশ্রয় গ্রহণ করতে চায়।
ডিপ্রেশনে থাকলে আপনার করনীয়
যখন আপনি ডিপ্রেশনে থাকবেন তখন আপনার প্রথম পদক্ষেপ হবে এর থেকে মুক্তি পাবার উপায় খুঁজে বের করা। ডাক্তারের শরণাপন্ন হবার পাশাপাশি কিছু কাজ করতে পারেন যাতে করে আপনি কিছুটা ভাল অনুভব করবেন,
ব্যায়াম করুন
আপনি যখন ডিপ্রেশনে থাকবেন তখন এক্সারসাইজ করার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট দৌড়ানো আপনার জন্য ভাল হতে পারে। যদিও মানুষ ডিপ্রেশনে থাকলে কোন কিছু করার আগ্রহ পায় না, শুয়ে থাকতে পছন্দ করে তবুও নিজেকে এর থেকে উত্তরণের জন্য এক্সারসাইজকে গুরুত্ব দিন৷ প্রয়োজনে বন্ধুদের ডেকে আনুন, একসাথে এক্সারসাইজ করুন।
মানসিক প্রশান্তির জন্য মেডিটেশন করতে পারেন, সঠিক ভাবে মেডিটেশন পদ্ধতি না জানলে ইন্টারনেটে সার্চ করুন।
নিজেকে সঠিক পুষ্টি দিন
ডিপ্রেশনে থাকলে মানুষের ক্ষুধায় পরিবর্তন আসতে পারে, কেউ কেউ আগের চেয়ে বেশি খাওয়ার চাহিদা অনুভব করতে পারেন অথবা কারো ক্ষুধা কমে যেতে পারে। যাই হোক, নিশ্চিত হোন আপনার দেহে সঠিক পুষ্টি সরবরাহ হচ্ছে কিনা। শরীরে সঠিক ভাবে পুষ্টি সরবার হলে এটি আপনার মেজাজকে ভাল রাখতে পারে৷ বেশি করে ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
সমাধান খুঁজে বের করুন
কি কারণে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন সেটা আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করুন৷ সমস্যার সমাধান কি হতে পারে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন। প্রয়োজনে কাছের এবং বিশ্বস্ত বন্ধুকে খবর দিন, তার সাথে কথা বলুন। সমস্যা গুলো তুলে ধরুন, দেখুন কোন সমাধান আসে কিনা। মনের মধ্যে কষ্ট চেপে না রেখে সব কিছু শেয়ার করুন।
নিজেকে সময় দিন
ডিপ্রেশনে থাকলে চুপ চাপ বসে না থেকে নিজেকে সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে পারেন। যেমন আপনি আর্ট করতে পারলে, কোন কিছু আঁকতে বসে যান, গান গাইতে পারেন, নাচতে পারেন। নিজেকে বিভিন্ন বিনোদনের মধ্যে রাখতে পারেন সিনেমা দেখতে পারেন গান গাইতে পারেন।
ডিপ্রেশনে থাকার সময় গুলোতে আপনি বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে পারেন, নামাজ পড়তে এতে করে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যাবে।
ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করুন
ডিপ্রেশনে থাকার সময় স্বাভাবিক ভাবে সব কিছু নেতিবাচক মনে হয়, চারপাশের সব কিছু অসহ্য লাগে কিন্তু নিজেকে এই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি দিতে ইতিবাচক ভাবে দেখুন সব কিছু। পরিবারকে সময় দিন, সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলুন৷ বিভিন্ন গবেষণা বলছে অধিকাংশ মানুষের ডিপ্রেশনের সূত্রপাত হয় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে, তো আপনার ক্ষেত্রেও যদি এমনটি হয় তাহলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে কিছু দিনের জন্য দূরে রাখুন।
শেষ কথা
যখন আপনি ফিল করবে আপনি মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেশনে আছেন তখন সাথে সাথে ভাল কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিন পাশাপাশি উপরের পাঁচটি কাজ করতে পারেন। ডিপ্রেশনে আপনার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যেতে পারে এজন্য নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন, সর্বোপরি নিজের খেয়াল রাখুন